1. smsitservice007gmail.com : admin :
মাদক অধিদপ্তরে চাকরি পেলো মাদক মামলায় অভিযুক্ত - সতেজ বার্তা ২৪
মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন
মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩, ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
প্রাপ্ত কেন্দ্র 70 : আজমত উল্লা 29923, জায়েদা খাতুন 33397    ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ জুন

মাদক অধিদপ্তরে চাকরি পেলো মাদক মামলায় অভিযুক্ত

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩
  • ২১ বার পঠিত

মাদক মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামির চাকরি হয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে! শুধু মাদক মামলা নয়, ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্তদেরও একইভাবে চাকরি হয়েছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টকে পাশ কাটিয়ে এসব চাকরি দেওয়া হয়েছে। এমনকি চাকরির পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও দুই জনের চাকরি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত দুই বছরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে ৬৫৪ জনের নিয়োগ হয়েছে। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ঘটেছে এমনসব তুঘলকি ঘটনা। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এসব অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত কমিটি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এসব অভিযোগের কারণে নিয়োগ কমিটির সভাপতি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আজিজুল ইসলামকে কক্সবাজারে বদলি করা হয়েছে।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে অতিরিক্ত মহাপরিচালক আজিজুল ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, ‘যথাসাধ্য স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কোনো মামলায় যদি কেউ অভিযুক্ত থাকেন তাহলে তাদের চাকরি চলে যাবে। আমরা যখন চাকরির জন্য সুপারিশ করেছি, তখন হয়তো অভিযুক্ত ছিলেন না। আমরা জানলে তাদের বাদ দিতাম।’ অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত কমিটি কি আপনার সাক্ষ্য নিয়েছে? জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাকে ডাকা হয়েছিল, আমি আমার কথা বলেছি। এখন সেটা কী পর্যায়ে আছে সেটা আমি জানি না।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছরে অ্যাসিসট্যান্ট প্রসিকিউটর, সিপাহী ও এমএলএস পদে ৬৫৪ জনের নিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে অ্যাসিসট্যান্ট প্রসিকিউটর পদে ৪২ জন, সিপাহী পদে ৫৯০ জন ও এমএলএস পদে ২২ জন নিয়োগ পেয়েছেন। ২০২১ সালে নিয়োগের এই প্রক্রিয়া শুরু হলেও গত বছর নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়। নিয়োগ কমিটির সভাপতি ছিলেন তৎকালীন পরিচালক (প্রশাসন) আজিজুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া তার সময়েই সম্পন্ন হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, মো. আদনান নামে একজন সিপাহী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি নরসিংদী জেলা কার্যালয়ে কর্মরত। ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে মাদকের একটি মামলায় (৫৫/৬৮৯) পুলিশ চার্জশিট দিয়েছে। এমনকি আদনান পরীক্ষায়ই অংশ নেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার নিয়োগের আগে পুলিশ ও গোয়েন্দা রিপোর্টে এই মামলার কথা উল্লেখ থাকলে সেটাকে পাশ কাটিয়ে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মুসাইফ মারুফ ও সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধেও ফৌজদারি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে মারুফ বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অফিস সহায়ক হিসেবে কাজ করছেন। আর সাজ্জাদ সিপাহী হিসেবে নরসিংদী জেলা কার্যালয়ে যোগদান করেছেন।

সূত্র জানিয়েছে, নরসিংদীতে কর্মরত সিপাহী রায় মোহন রাজবংশীও পরীক্ষায়ই অংশ নেননি। তারপরও তার চাকরি হয়েছে! কীভাবে এটা সম্ভব? জানতে চাইলে অধিপ্তরের একজন কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, ‘ওএমআর শিটে কারো রোল নম্বর না থাকায় চতুরতার সঙ্গে তা বদলে দেওয়া হয়েছে।’ এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে অধিদপ্তরের আইসিটি বিভাগ অবশ্যই জড়িত বলে দাবি ঐ কর্মকর্তার। এসব প্রক্রিয়ায় অবৈধ লেনদেনের বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।

অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে তৃতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এবারই প্রথম প্রথা ভেঙে অধিদপ্তরে ওএমএল মেশিন বসিয়ে এমসিকিউ পদ্ধতিতে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। বিষয়টি তদন্তের জন্য মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (অগ্নি অনুবিভাগ) মোসাম্মত্ শাহানারা খাতুনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল কমিটির সামনে হাজির হয়ে নিজের বক্তব্যও দিয়েছেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক আজিজুল ইসলাম। এর পরই ৩০ এপ্রিল আজিজুল ইসলামকে কক্সবাজারে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিচার্স ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত সেখানে তিনি যোগদান করেননি। অবসরের শেষ বছরে বর্তমান কর্মস্থলে থেকেই অবসরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে ঊর্ধ্বতনদের কাছে অনুরোধ করেছেন তিনি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রায় ছয় বছর তিনি একই অধিদপ্তরে চাকরি করছেন। এখান থেকেই কেন তাকে অবসরে যেতে হবে? কী আছে এখানে?

তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব (অগ্নি অনুবিভাগ) মোসাম্মত্ শাহানারা খাতুন ইত্তেফাককে বলেন, ‘যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তার বক্তব্য আমরা শুনেছি। কিন্তু যিনি অভিযোগ করেছেন তাকে বারবার নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি আসেননি। আরেক জন অভিযোগকারী বলেছেন, তিনি অভিযোগ করেননি। তার স্বাক্ষর জাল করে কেউ এটা দিয়েছে। ফলে তদন্তের প্রক্রিয়া আর আগায়নি। তিনি না এলে আমরা আমাদের মতো রিপোর্ট দিয়ে দেব।’

এ জাতীয় আরও খবর
Translate »