কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে এবার মিলল ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। আজ শনিবার দিনভর গণনা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে সকাল পৌনে ৯টা থেকে ২০৬ জনে মিলে টাকা গণনার কাজ শুরু করেন।
এবার পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে মেলে রেকর্ড ২০ বস্তা টাকা। গণনা শেষে এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি টাকা পাওয়া গেছে এবার। এ ছাড়া পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা।
জেলা শহরের নরসুন্দা নদীর তীরের ঐতিহাসিক মসজিদটিতে আটটি দানবাক্স আছে। তিন মাস পরপর এই বাক্সগুলো খোলা হয়। এবার দানবাক্স খোলা হয়েছে ৩ মাস ৬ দিন পর। এর আগে গত বছরের ১ অক্টোবর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে পাওয়া গিয়েছিল ১৫ বস্তা টাকা। দিনভর গুনে পাওয়া গিয়েছিল ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা। এ ছাড়া পাওয়া গিয়েছিল বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা। টাকা ছাড়াও মসজিদে নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক এ টি এম ফরহাদ চৌধুরী জানান, সকাল পৌনে ৯টায় ৮টি দানবাক্স খুলে ২০ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। প্রথমে টাকাগুলো লোহার সিন্দুক থেকে বস্তায় ভরা হয়। পরে মেঝেতে ঢালা হয়। এরপর চলে গণনার কাজ।
প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে দিনভর চলে টাকা গণনার কাজ। এই কাজে মাদ্রাসার ১১২ জন খুদে ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়া হয়। অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তাও করা হয়। এ ছাড়া এই মসজিদের জমানো টাকা দিয়ে মসজিদ, মাদ্রাসাসহ এখানে ছয়তলাবিশিষ্ট একটি দৃষ্টিনন্দন ইসলামি স্থাপনা নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে ১০০ কোটির বেশি টাকার প্রয়োজন হবে।