মোঃ মাহাবুব আলম তুষার
নিজস্ব প্রতিনিধি
গ্রামীণ ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে মানিকগঞ্জের হাজারী গুড়ের নাম। ঘ্রাণে ও স্বাদে এর জুড়ি মেলা ভার।
চাহিদা বেড়েছে মানিকগঞ্জে হাজারী গুড়ের।
চলতি মৌসুমেও মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ঝিটকা এলাকায় ঐতিহ্যবাহী বিশেষ এ গুড় তৈরি শুরু হয়েছে,উপকরণের দাম বৃদ্ধিসহ দিন দিন গাছের সংখ্যা কমে আসায় বিপাকে গুড় উৎপাদনকারীরা।
মানিকগঞ্জে কাক ডাকা ভোরে শুরু হয় গাছিদের ব্যস্ততা। সূর্যের সাথে পাল্লা দিয়ে সারি সারি খেজুর গাছ থেকে চলে রস সংগ্রহের ধুম। খেজুর গাছে বাঁধা হাড়িতে সংগ্রহীত রস নিয়ে আসেন গাছিরা। ১২ লিটার রস জালিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয় ১ কেজি হাজারী গুড়। পরে তা প্যাকেট করে বাজারজাত করা হয়।
তবে উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়াসহ খেজুর গাছের সংখ্যা কমে আসায় বিপাকে পড়েছেন গাছিরা।গুড় প্রস্তুত সম্পর্কে কৃষকরা বলেন, গুড়ের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বাজারে গুড় নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। অনলাইন অর্ডারের মাধ্যমেই বেশিরভাগ গুড় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।তবে খরচ আগের থেকে অনেক বেড়েছে বলে অভিযোগ করে সতেজবার্তা এর প্রতিনিধি গনকে সংশ্লিষ্টরা। যেখানে বিগত বছরগুলোতে গাছির খরচ ছিল ১ লাখ টাকা সেখানে গাছির পেছনেই এখন ২ লাখ টাকা করে খরচ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গুড় ব্যবসায়ীরা।
স্বাদ ও ঘ্রাণে অন্যন্য এ গুড়ের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বাইরেও। স্থানীয় বাজারেও আগে থেকে অর্ডার না দিলে মিলছে না গুড়।ঐতিহ্য রক্ষায় জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি নকল হাজারী গুড় তৈরি বন্ধে কাজ করছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।এ ব্যাপারে গোপীনাথপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কুদ্দুস সতেজবার্তার প্রতিনিধির কাছে বলেন, হাজারী গুড়ের এ ঐতিহ্য ৪০০ বছর আগেকার। ঐতিহ্য ধরে রাখতে সরকার এবং জনপ্রশাসন একসাথে কাজ করছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে গুড়ে ভেজাল মেশাতে না পারে সেজন্য স্থানীয় পর্যায়ে তদারকি করা হচ্ছে। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।৪০০ বছর আগে হরিরামপুরের ঝিটকা এলাকার গুড়ের ঘ্রাণ ও স্বাদে মুগ্ধ হয়েছিলেন প্রথম রানি এলিজাবেথ। তারপর থেকেই এ গুড়ের নাম ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।হরিরামপুরের ঝিটকায় হাজারী গুড় তৈরিতে ৩০টি পরিবারের ৩০০ জন গাছির মাধ্যমে প্রতিদিন ৩ হাজার গাছ থেকে ২১০ কেজি গুড় তৈরি হয়।